ওজন বেড়ে যাওয়া এখন বিশ্বজুড়ে অন্যতম বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। জিনগত কারণ, ফ্যাটযুক্ত ও নানাপদের ফাস্টফুডে অভ্যস্ততা এর জন্য দায়ী। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি তিনজনের মধ্যে দুই জনই ‘স্থুল’ শরীরের মানুষ হিসেবে স্বীকৃত। এদের মধ্যে ৩৭ শতাংশের বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) ৩০ এর উপর। শরীর স্থুল হলে ডায়াবেটিস, হূদরোগ, ক্যান্সারসহ নানা রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর স্থুলতার সঙ্গে শারিরীক সৌন্দর্যের বিষয়টিও জড়িত আছে বলে মনে করেন অনেকে। তাই একবার ওজন বেড়ে গেলে তা কমানোর অভিযানে নামেন অনেকে।
কিন্তু এক্ষেত্রে মূল যে সমস্যা তা হলো, একবার মুটিয়ে গেলে তা কমানো খুব সহজ কাজ নয়। অনেকে মনে করেন মাসখানেক ধুমিয়ে ব্যায়াম করলে কিংবা হাটলে কিংবা দৌঁড়ালে ওজন কমে যাবে। কিংবা ডায়েট করলে এই লক্ষ্য অর্জন হবে। কিন্তু ওজন কমানোর চেষ্টা সবার ক্ষেত্রে সফল হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের একদল চিকিত্সাবিদ এক গবেষণায় জানিয়েছেন কেন বার বার চেষ্টা সত্ত্বেও অনেকের ওজন প্রত্যাশিত মাত্রায় কমে না।
তারা বলেছেন, ক্যালরি সম্পর্কে ধারণা নেই অনেকের। কোনো কোনো খাবারের এক টুকরোতে যে পরিমাণ ক্যালরি আছে অনেক খাবারের এক কেজিতেও তা নেই। তাই হয়তো কোনো একটি খাবার অল্প খেয়ে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলে বললেন, ‘সারাদিনে সামান্য খেয়েছি’। অথচ এমনও তো হতে পারে ওই খাবারটি উচ্চ ক্যালরিযুক্ত। তাই ওজন কমার পরিবর্তে বেড়ে গেল! এভাবে অনেকে হতাশ হয়ে ওজন কমানোর চেষ্টাই ছেড়ে দেন। ডায়েট করতে গেলে তাই একটু ঘাটাঘাঁটি করে খাবারের ক্যালরি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।
আরেকটি কারণ হলো, কয়েকদিন ডায়েট করলে পরের কয়েকদিন ভরপেট খাওয়া। কোনো পার্টি কিংবা দাওয়াতে গেলে উদরপূর্তি খাওয়া অনেকের অভ্যাস। তারা মনে করেন, ‘একদিন তো মাত্র খাচ্ছি’! কিন্তু ওইসব অনুষ্ঠানে সাধারণ উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। তাই এমনও হতে পারে এক মাসে যে ক্যালরি খরচ করেছেন তা ওই এক দিনেই আবার ফিরে এলো। গবেষকরা তাই বলেছেন, ভালো খাবারের আয়োজন দেখলেই গলধঃকরণ করা উচিত নয়। এসব অনুষ্ঠানে ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে সবজি দিয়ে তৈরী খাবার বেশি করে খাওয়া যেতে পারে। অনেকে ওজন কমানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবন করে থাকেন। কিন্তু গবেষকরা বলেছেন, তাদের জরিপে দেখা গেছে ওজন কমানোর ব্যাপারে বহু ডায়েটিশিয়ান ভুল ওষুধ দিয়েছেন, যেগুলো ওজন কমানোর পরিবর্তে বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ডায়েট করলেও শরীরে শক্তি ধরে রাখার জন্য সুষম খাবার খেতে হবে। অন্যথায় দুর্বলতা পেয়ে বসতে পারে। মাথা ঝিমঝিম করাসহ নানা উপসর্গও দেখা দিতে পারে। একারণে ওজন কমানোর উদ্দেশে ডায়েট করতে গেলে অপরিকল্পিতভাবে তা শুরু করা উচিত নয়। পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করা ভালো। আর একজন নারীর কোমরের পরিধি যদি ৩৫ ইঞ্চির বেশি আর পুরুষদের কোমরের পরিধি ৪০ ইঞ্চির বেশি হয় তবে সেটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ। তাদের চিকিত্সকের স্মরণাপন্ন হওয়া উচিত। কারণ তাদের অগোচরে বড় কোনো শারিরীক জটিলতা বাসা বেধেছে কিনা সেটা অবশ্যই চেকআপ করিয়ে নেয়া উচিত।
বিপ্লব চন্দ্র চক্রবর্তী
মাকসুদুল বারী স্বপন
২৩৮/১ আউটার সার্কুলার রোড, মৌচাক মার্কেট, তৃতীয় তলা, মারুফ মার্কেট চক্র, ঢাকা ১২১৭, বাংলাদেশ। ফোনঃ ০২৯৩৫১৪১০, ৯৩৫২১০২, মোবাইলঃ ০১৭১২৫৭১০৯৮, ০১৯৩০২৯৫৯২৯ ইমেইলঃ geebdnews@hotmail.om